সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মোহছেন আউলিয়ার মাজার - Voice Of Sanatan
Vedic Video!Subscribe To Get Latest Vedic TipsClick Here

সাম্প্রতিক খবর

Voice Of Sanatan

সত্যের সন্ধানে অনুসন্ধান

Post Top Ad

সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মোহছেন আউলিয়ার মাজার

  

বলরাম দাশ অনুপম আষাঢ় মাসের ছয় তারিখে হয়রে ঝড়-তুফান, মোহছেন বাবার দরবারেতে আসে কত হিন্দু-মুসলমান। চট্টলার জনপ্রিয় মাইজভান্ডারী শিল্পী শিমুল শীলের গানের এই গানের কলির মতই ধর্ম-বর্ণের বৈষম্য ভুলে হযরত শাহ্ মোহছেন আউলিয়া (রা:) মাজারে প্রতিবছর বসে হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলা। যেখানে এক কাতারে বসে মোহছেন বাবার দোয়া/আর্শিবাদ পেতে প্রার্থনা করেন ধনী-গরীব সকলে। 

সবমিলিয়ে আনোয়ারার বটতলী গ্রামের মোহছেন বাবার মাজারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম নিদর্শন ও দৃষ্টান্ত। যা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই যায় না। ছোটকাল থেকে মা-বাবার কাছ থেকে শুনে মোহছেন আউলিয়া বাবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা ছিল একটু বেশী। ধীরে ধীরে যখন বয়স বাড়তে থাকে ততই মোহছেন আউলিয়া বাবার মাজারে যাওয়ার আগ্রহটা বেড়ে যায়। সর্বশেষ গত ৪/৫ বছর ধরে যাওয়ার ইচ্ছেটা প্রবল হয়ে উঠে। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় যাওয়া হলো না। নাকি নিয়ত ঠিক না থাকলে বাবার দরবারে যাওয়া যায় না। 

তাই নিয়তিকেই মেনে নিয়ে কোন রকম শান্ত হয়। সর্বশেষ গত বছর অর্থ্যাৎ ২০১৯ সালে মনকে এক প্রকারে বেঁধেই বাবার দরবারে যাওয়ার মনস্থির করি। কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে রাত ৯টার বাসে চট্টগ্রামের টিকেট কেটে নতুন ব্রীজের আগে ক্রসিং নেমে সিএনজি যোগে অবশেষে যাওয়া হল মোহছেন আউলিয়ার পবিত্র দরবার শরীফে। দরবার শরীফের প্রায় এক কিলোমিটার দূরের নামিয়ে দেয়া হলো যান ও লোক জটের কারণে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই যাত্রা শুরু মাজারের দিকে। যেতে যেতে শুধুই শুনা যাচ্ছিল মাইজ ভান্ডারী গান আর দু’চোখে দেখা যাচ্ছিল মানুষ আর মানুষ। ধর্ম-বর্ণ, ধনী-গরীব, ছোট-বড় সকলে সকল বৈষম্য ও হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে এক সাথে এক কাতারে ছুটে চলেছে মোহছেন আউলিয়া বাবার মাজারের দিকে।

 ১০/১৫ মিনিট হাঁটার পর অবশেষে বাবার দরবার স্পর্শ করে পূর্ণ হলো দীর্ঘদিনের মনোবাসনা আর মোহছেন আউলিয়ার মাজার দেখার স্বাদ। দেখা হল দীর্ঘদিন ধরে মোহছেন আউলিয়ার গান গেয়ে সারাদেশ মাতিয়েছেন সেই গুণী কন্ঠশিল্পী শিমুল শীলের সাথে। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন মাজারের পাশ্ববর্তী খাদেম এসএম আবু ছৈয়দের বাড়িতে। সেখানে তবরুক খেয়ে শিমুল শীলের সাথে আলাপচারিতায় উঠে এলো হযরত শাহ্ মোহছেন আউলিয়া (রা:) কিছু জীবনী। শুনালেন মোহছেন আউলিয়াকে নিয়ে তার গাওয়া কয়েকটা গান। তার মধ্যে অন্যতম হলো “কি ধন দিলা আল্লাহ্ তুমি আনোয়ারা থানাতে, বটতলী গ্রাম রোশন হলো সেই নূরের আলোতে”। 

শিমুল শীলের গান আর মোহছেন আউলিয়ার কিছু কথা শুনে বাবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আর বিশ্বাস আগের চেয়ে অনেকটা বেড়েই গেল। রাতভর মাইজ ভান্ডারী গান আর মোহছেন আউলিয়ার মাজারে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ভক্তদের সাথে কুশল বিনিময়ের সাথে কেটে গেল রাত। এবার ফিরে আসার পালা। মন কোন ভাবেই পবিত্র মাজার ও এর প্রাঙ্গন ছেড়ে আসতে চাইছিল না। তবুও আসতে হলো। 

এবার অপেক্ষা করেছিলাম ২০২০ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হওয়া মোহছেন আউলিয়া বাবার বার্ষিক ওরশে যাওয়ার। কিন্তু করোনা মহামারিতে ওরশ স্থগিত হওয়ায় এবং লকডাউন চলমান থাকায় যাওয়া হলো। এবার আগামী বছর যাওয়ার আশায় রইলাম। 
(লেখক-একজন সংবাদকর্মী, কক্সবাজার, মোবাইল ঃ ০১৮১৮-২০৫৭৬৩)।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

আপনার বিজ্ঞাপন দিন।