উজ্জ্বল
রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।। নড়াইলের প্রীতি এবারও মাঠে বোরো ধান কেটেছে
বাবা-মাকে কাজে সাহায্য করেও এসএসসিতে গোল্ডেন! প্রীতি এবারও মাঠে বোরো ধান
কেটেছে এবং বাড়িতে বহন করে এনেছে। লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে মাঠে ধানের চারা
(পাতো) তোলা, ফসল নিড়ানির কাজ করা, পাটের আঁশ ছা*ড়ানো ইত্যাদি কাজে
শ্রমজীবী বাবা-মাকে সাহায্য করতো। অর্থের অ*ভাবে তেমন একটা ভালো কোনো পোশাক
পরতে পারেনি। ভালো পরিবেশ পায়নি। কোনো বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের কাছে
স্পেশালভাবে প্রাইভেট পড়তে পারেনি। সবকিছু সামলিয়ে বাড়ি থেকে ৮ মাইল পথ
বাইসাইকেলে গিয়ে স্কুল করেছে। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান,
এভাবে নড়াইল সদরের মালিহাট গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান প্রীতি
বিশ্বাস গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ
থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। প্রীতি এ সাফল্যের জন্য স্কুলের শিক্ষক এবং
পরিবারের অবদানের কথা বলেন। সে জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে গ্রুপে
পড়িয়েছেন। কিন্তু কোনো ফি নেননি। তার ইচ্ছা চিকিৎসক হবার। বাবা-মা অর্থের
অভাবে স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হবার কথা বলেছেন। কিন্তু ভালো ফলাফলের
জন্যতো একটি ভালো কলেজে পড়ার দরকার।
জানা
যায়, তাদের বাড়িতে থাকার একটিমাত্র ঘর। ২ বোন এবং বাবা-মা, দাদীসহ ৫জনের
সংসার। বড় বোন আশা বিশ্বাস যশোরে একটি নার্সিং কলেজে লেখাপড়া করে। থাকার
জায়গা ছাড়া তাদের চা*ষের কোনো জমি নেই। বাবা-মা দুজনই মাঠে কাজ করেন।
বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গরু পালন সংসারের কিছু বাড়তি আয় হয়। প্রীতি ও আশার
লেখাপড়ার কথা ভেবে সম্প্রতি অনেক ক*ষ্টে বাড়িতে পল্লি বিদ্যুতের সংযোগ
নেওয়া হয়েছে। বাবা-মা উপার্জন না করলে তাদের অ*র্ধাহারে-অ*না*হারে থাকতে
হয়। প্রীতি পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও সে
সাফল্য পেয়েছে।
প্রীতির
বাবা তাপস বিশ্বাস এবং মা রিনা বিশ্বাস বিভিন্ন ক*ষ্টের কথা বরতে গিয়ে
কেঁদে ফেলেন, তারা বলেন, একান্ত ইচ্ছা মেয়েকে চিকিৎসক করার। কিন্তু এতো বড়
স্বপ্ন কি পূরণ হবে! বড় মেয়ে যশোরে নার্সিং কলেজে পড়ে। সেখানে একটি খরচ
দিতে হয়। প্রীতির ভালো কলেজে পড়াতে গেলেও তো অনেক অর্থের প্রয়োজন। এখন দেখা
যাক বিধাতা আমাদের কপালে কি লিখেছেন!
No comments:
Post a Comment