শহীদ মিনার মূলত ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদের উদ্দেশ্যে সম্মান নিবেদনের জন্য তেরী। কিন্তু চট্টগ্রামে স¦াধনীতা দিবস, বিজয় দিবস, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস সহ সব জাতীয় দিবসে চট্টগ্রামবাসীর শ্রদ্ধা জানানোর একমাত্র অবলম্বন নগরীর মুসলিম ইনস্টিটিউট হলের সামনে অবস্থিত শহীদ মিনারটি। দু:খের বিষয় হলো স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও চট্টগ্রাম মহানগরে স্থাপিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ।
কোনো জাতীয় দিবস আসলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের ব্যাপ্যারে তোড়জোড় কিংবা আলোচনা হলেও পারতপক্ষে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি এখনো হয়নি। ফলে চট্টগ্রামে সব আয়োজন বরাররই অপূর্ন থেকে যায়। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রামের নন্দন কাননের মুসলিম ইনস্টিটিউট হলের সামনে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনারটি। শুরুতে এটি মাতৃভাষা উপলক্ষে ব্যবহৃত হলেও ধীরে ধীরে তা সব জাতীয় দিবসের শ্রদ্ধা জানানোর আশ্রয়স্থল হয়ে উঠে। চট্টগ্রামে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে সাংস্কৃতিক কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা দাবি জানালেও নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ। এ নিয়ে নগর বাসীদের মধ্যে নানা ক্ষোভ ও অভিমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন,চট্টগ্রাম উন্ন্য়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক নানা প্রতিশ্রæতি ও আশার বাণী শোনালেও কাঠামোগত কোনো অগ্রগতি হয়নি এখনো। তবে নানা ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এখন নিজেদের উদ্দ্যোগে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করছে যাতে সংশ্লিষ্টমহলের দৃষ্টি আর্কষণ করা যায়। তেমনি এক মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন মহানগর যুব মহিলা লীগ। গত বছর নির্মিত এ প্রতীকী স্মৃতিসৌধ টিতে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও এবার ১৬ ডিসেম্বর এটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদদের উদ্দেশ্যে সম্মান জানানো হবে। এ প্রসঙ্গে প্রতীকী স্মৃতিসৌধের উদ্দ্যোক্তা নগর যুব মহিলালীগের আহবায়িকা অধ্যাপিকা সায়রা বানু রোশনী, বলেন স্বাধীনতার দীর্ঘসময় পরও চট্টগ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ হয়নি, এটি অচিন্তনীয় একটি ব্যাপার। বড় কিছু ভালো কিছু চট্টগ্রাম থেকে শুরু হলেও চট্টগ্রামের প্রতি এ উদাসীনতা কেনো তা বোধগম্য না। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিষয়টি আমাকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়।
তাই এ স্মৃতিসৌধ আমি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তৈরী করেছি। আমি এ প্রতীকী উদ্দ্যোগের মাধ্যমে জানাতে চেয়েছি চট্টগ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ হোক, চট্টগ্রামকে এভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দিক থেকে পিছিয়ে রাখা ঠিক হচ্ছে না। নির্মিত এ স্মৃতিসৌধটির জন্য ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। তাছাড়া কাঠামোগত ভাবে এটির দৈর্ঘ্য ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৪ ফুট। এতে সাতটি স্তম্ভ রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরে স¥ৃতিসৌধ নির্মাণে এখনো কেনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই এ প্রসঙ্গে মহানগর আওমীলীগের সহ সভাপতি ইব্রাহিম চৌধুরী বাবুল বলেন, সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবের কারণে এখনো স্মৃতিসৌধ নির্মাণে সমর্থ হয়নি।
যেটি আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।
এদিকে স্মৃতিসৌধ না থাকায় হতাশ চট্টগ্রামের তরুণ প্রজন্মও। এ প্রসঙ্গে
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী জাহানারা
ইসলাম বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ সরাররি দেখেনি, আমাদের অনেকের কাছে সুস্পষ্ট
ইতিহাস অজানা রয়েছে। একটি স্মৃতিসৌধ থাকলে নতুন প্রজন্ম স¦াধীনতার ইতিহাস
সর্ম্পকে সম্যক জ্ঞান লাভ ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার সুযোগ সৃষ্টি
হবে।
No comments:
Post a Comment