জার্মান ইনস্টিটউট অব অলটারনেটিভ অ্যানার্জিতে রিসার্চ অফিসার ও জার্মান ইনস্টিটউট অব অলটারনেটিভ এনার্জির বাংলাদেশ প্রতিনিধি তড়িৎ প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর।
দীর্ঘ ১৯ বছর পর সম্প্রতি দেশে আসার অল্পকিছু দিনের মধ্যেই মুখোমুখি হন করোনা বিদ্ধ সংকটাপন্ন এক নগরীর। চিরচেনা সেই প্রাণের চট্টলা যেন অন্যরূপে আবির্ভূত হতে চলছে। ‘লকডাউন’- নামক বারণ নিষেধে ঘরে বসে থাকার পাত্র জ্যোতি নই। তবুও করার তো কিছুই নেই, এই করোনাভাইরাস থামিয়ে দিয়েছে বিশ্বের অনেক উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রকেও। থমকে যাওয়া পৃথিবীতে প্রাণের নগরী চট্টলার অসহায় পরিবারগুলোর কথা ভাবতেই অদম্য জ্যোতির প্রাণ কেঁদে উঠে।
নিজের সর্বস্ব দিয়ে যুক্ত হয়ে পড়েন মানবিক কর্মযজ্ঞে।মূলত সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সরকার ঘোষিত ছুটিতে সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও মজুরি কার্যক্রম রয়েছে বন্ধ। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষগুলো। মানবতার চরম এ দুর্দিনে এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে জ্যোতির্ময় ধর নামের এক মানবতাবাদী যুবক।
সরকার ঘোষিত ছুটির একেবারে প্রথম পর্যায় থেকেই জ্যোতি নেমে পড়েন মানবিক কার্য্যক্রমে। অসহায়, দুস্থ এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারগুলোকে ঘরেঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সহ যে মানবিক সহযোগিতা চলমান রেখেছেন তিনি, সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
বৈশ্বিক বিপর্যয় আর মানবিক বিপর্যয় একাকার হয়ে তৈরি হওয়া যুগপৎ মানবিক সঙ্কটে জ্যোতির্ময় ধরের মহতী এই কার্য্যক্রম সত্যি প্রশংসামুখর। বিগত ২৭শে মার্চ থেকে এ পর্যন্ত নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে তিনি চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ২০০০ অসহায় নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত চট্টগ্রামের ২১ জন গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য পুষ্টিকর ফলমূল সমৃদ্ধ উপহার নিয়ে তাদের খোঁজখবর রেখেছেন এই প্রকৌশলী। নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন করোনা-আক্রান্ত সাংবাদিক সাহসসঞ্চার সেল চট্টগ্রাম এর মাধ্যমে। ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম সংবাদপত্র কম্পিউটার অপারেটর এসোসিয়েশন এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পরা ৫০ জন সংবাদপত্র কম্পিউটার অপারেটর এর পরিবারকে ১০ দিনের শুকনা খাদ্য ও মানবিক সাহায্য প্রদান করেন । করোনা পরিস্থিতিতে কাজ হারানো ২০ জন সাংবাদিকের পরিবারকে তিনি খাদ্য মানবিক সাহায্য ও উপহার প্রদান করেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে কর্মরত সকল ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী, পিয়ন, নৈশ প্রহরি দের তিনি ঈদ উপহার নিয়ে তাদের পাশে দাড়ান তিনি।
এছাড়া তিনি মানবসেবায় যুব রেডক্রিসেন্ট চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সেই সাথে বিশিষ্ট সাংবাদিক তুষার আব্দুল্লাহ কর্তৃক পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “করোনায় তারুন্য” চট্টগ্রামের ত্রাণ কর্মী হিসেবে মাঠে আছেন। জ্যোতির্ময় ধর শুধু চট্টগ্রামেই নই, ঢাকার সেচ্ছাসেবী নাফিসা খানের মাধ্যমেও অনেক পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চট্টগ্রামের এই সন্তান।
করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন ও সৎকার কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের জন্যও তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন সহায়তার হাত এবং করোনা পরিস্থিতিতে অর্থ কষ্টে থাকা কয়েকটি অনাথ আশ্রম ও এতিমখানায় ও তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন মানবকল্যাণে সাহায্যের হাত। উল্লেখ্য, প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক রণজিৎ কুমার ধর ও চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রীতা দত্তের একমাত্র পুত্র এবং দৈনিক আজাদীর প্রয়াত বার্তা সম্পাদক সাধন ধরের দৌহিত্র।
No comments:
Post a Comment