বরগুনার আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া বাজারসংলগ্ন আবাসনের সামনে সুকুমার চন্দ্র শীলের পৈতৃক রেকর্ডীয় জমি দখল করে ঘর তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, আমতলীর গুলিশাখালীর কলাগাছিয়া গ্রামের মৃত ধলু চন্দ্র শীলের কলাগাছিয়া মৌজার ১৬ নম্বর খতিয়ানের, ৩৬ নম্বর দাগের তিন কাঠা ১২ শতাংশ রেকর্ডীয় সম্পত্তির মধ্য থেকে ব্যবসা করার জন্য তার ছেলে সুকুমার চন্দ্র শীল গত ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে পাঁচ বছরের জন্য ১০ হাত দৈর্ঘ্য ও আট হাত প্রস্থের একটি প্লটের মাটি ভাড়া বার্ষিক দুই হাজার টাকা চুক্তিতে হানিফ বিশ্বাসের কাছে ভাড়া দেয়। সেখানে হানিফ বিশ্বাস মাটি ভরাট করে ঘর তুলে সিমেন্ট-বালুর ব্যবসা শুরু করেন। ছয় মাস আগে হানিফ সিমেন্টের ব্যবসা বন্ধ করে সেখানে একটি ওয়ার্কশপ ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী মেরামত করা মেকানিকের কাছে ভাড়া দেন।
মাটি ভাড়ার চুক্তির শর্ত এত দিন ঠিকঠাকভাবে চলছিল। হঠাৎ গত ১০ মে হানিফ বিশ্বাস ভাড়া নেয়া জমির চার পাশে আরো জমি বাড়িয়ে মাটি ভরাট করতে শুরু করেন। এতে সুকুমার বাধা দেন। এর দুই দিন পরে সেখানে হানিফ বিশ্বাস ঘর তুলে ফেলে। শুধু উপড়ের ছাউনি দেয়া বাকি আছে। বিষয়টি তখন সুকুমার চন্দ্র শীল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আমতলী থানায় জানান। পরে পুলিশ গিয়ে ঘর উঠানোর কাজ বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে হানিফ বিশ্বাস ও তার লোকজন বাড়াবাড়ি না করতে সুকুমারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে সুকুমার জানান।
সুকুমার চন্দ্র শীল জানান, আমার পৈতৃক সম্পতির একটা অংশ মাটি ভাড়া হিসেবে হানিফ বিশ্বাসের কাছে লিখিত চুক্তিতে বার্ষিক দুই হাজার টাকায় পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া দিয়েছি। সেই জমি চার দিক থেকে বাড়িয়ে মাটি ফেলে দখল করে জোরপূর্বক ঘর তুলছে। আমি এতে বাধা দিলে আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে হানিফ বিশ্বাস ও তার লোকজন।
গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ অ্যাডভোকেট মো: নুরুল ইসলাম বলেন, জমির মালিক সুকুমার চন্দ্র শীল, না পানি উন্নয়ন বোর্ড তা আমার জানা নেই। তবে সুকুমার চন্দ্র শীল ভোগ দখলে আছে সেটি আমি জানি। এখন ওখানে ঘর উঠানো আপাতত বন্ধ আছে।স্থানীয় বাসিন্দা হাকিম গাজী, পরিচয় চন্দ্র শীল জানান, এই জমি পৈতৃক সূত্রে মালিক সুকুমার চন্দ্র শীল। এ জমির একটা অংশ মাটি ভাড়া হিসেবে হানিফ বিশ্বাস সুকুমারের কাছ থেকে ব্যবসা করার জন্য নিয়েছেন।
অভিযুক্ত হানিফ বিশ্বাস সুকুমারের কাছ থেকে জমি ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি জোরপূর্বক জমি দখল করিনি ও তাদের ভয়ভীতিও দেখাচ্ছি না। শুধু চার দিকে বারান্দা দেয়ার জন্য ঘরের কাজ শুরু করেছিলাম। ওসি সাহেব এসে বলায় আমি ঘরের বর্ধিত বারান্দার অংশে কাজ বন্ধ করে রেখেছি।
আমতলী থানার ওসি আবুল বাশার নয়া দিগন্তকে বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের বর্ধিত অংশ ভেঙে হানিফ বিশ্বাসকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছি।
No comments:
Post a Comment