বাংলাদেশে রমজান মাসে হোটেল রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা; কিংবা কিছু খোলা থাকলেও ঢেকেঢুকে পর্দা করা- এই প্রক্রিয়াটা বাঙালি মুসলমানের প্রবলেম না। এই প্রবলেমটা হচ্ছে- গড়পড়তা বাঙালি মুসলমান ‘পুরুষদের ‘প্রবলেম।।
সারাদিন ধইরা রোজা রাখবো- তাই খাদ্যদ্রব্যের দিকে নজর গেলেই আমার রোজা ‘হালকা’ হয়ে যাবে; এই অধৈর্য্যপনা বাঙালি মুসলমান পুরুষের অজুহাত।
নইলে রোজা রেখে আমাদের মা-চাচীরা; অন্দরমহলে আর কিচেনে সারাদিন কাটিয়ে দেন।
দুপুর থেকেই ঘরের ভেতর ইফতারি সেহরি আর অন্যান্য পদের রান্না হয়। এগুলো কর্মজীবি গৃহিণী নির্বিশেষে সবাই পালন করেন। কই তাদের তো খাবার দেখে সংযম ছুটে যায় না?
তারা যদি খাবার বানাইতে অধৈর্য্য হয়ে যাইতেন; তাদের যদি খাবারের ঘ্রাণে ‘ক্ষিধে’ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতো- তাইলে রমজান মাসে আর এত এত পদের রান্না খাইতে হইতো না।
পুরো ব্যাপারটাই মনস্তাত্বিক।
সাস্টে পড়ার সময় দেখেছি, কিভাবে অন্য ধর্মের বন্ধুরা হোটেল রেস্টুরেন্ট খাবার না পেয়ে বাধ্য হয়ে সারাদিন রোজা রাখতো। অনেকেই সেহরিতে উঠতে পারতো না।
আর সারাদিন রান্না হয় না। কোথাও খাইতে পারতো না। তো ওই আগের দিন, দুপুরের পর ইফতারি জন্য বানানো জিলিপি খেয়ে সারাদিন উপবাস থাকতো।
তাছাড়া- মেয়েদের যাদের রোজা ভাঙতে হয় এবং অসুস্থ শিশুদের পানি খেতে কত যন্ত্রণা পোহাতে হয়, গোটা শহরটাতে। রোজা আমাদের; অন্যদের ভোগান্তির একশেষ।
কাউকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর মিলবে- এটাই রীতি। রোজার মাসে খাবার দেখলে- কষ্ট লাগে। সংযম নষ্ট হয়।
অথচ ওই আমিই আমেরিকায় ১৬ ঘন্টা রোজা রাখি। লাঞ্চ আওয়ারে, অন্যদের সাথে থাকার সময়ে গড়বড় করে খাইতেসে সবকয়টা। সংযম তো নষ্ট হয় না। কেননা পুরো ব্যাপারটাই মনস্তাত্বিক।
এই খাওয়ার-দাওয়া দেখে আকৃষ্ট হওয়ার ব্যাপারটা একদমই আপেক্ষিক।
ফুটপাথে যারা ইফতারি বিক্রি করে- তারা কি রোজা রেখে খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ‘ঈমান’ নষ্ট করে দেয়? (এবং এরা সিংহভাগই পুরুষ, ইনাদের খাদ্যানূভুতি কি তথাকথিত সংযমী পুরুষদের চেয়ে কম?
আর একটা কথা- যা বলতে চাইছিলাম শুরুতেই।
পিরিয়ডের জন্য মেয়েদের যে রোজাগুলো রাখা নিষেধ। এই রোজাগুলো ঈদের পর করতে হয়। এই ৫-৬ টা রোজা কি বাঙালি মুসলিম পুরুষ নিজের স্ত্রীর কষ্ট হবে বিবেচনা করেন? নাকি ঈদের পরে একজন রোজাদার ভদ্রমহিলাকে সামনে রেখে বাকীদের খুল্লাম-খুল্লা জোরসে খাওয়াটাই চলে অধিকাংশ ঘরে?
\
বাড়ির মহিলা ওই ৫-৬টা রোজা করছেন, সেই সাথে খাবার বানাচ্ছেন। সংসারের সবাইকে খাবার গিলাচ্ছেন, নিজেরা সারাদিন না খেয়ে।
উনাদের ‘সংযম’-এর সম্মানার্থে ওই ৫-৬ দিন কয়টা বাঙালি পুরুষ একটু রেখে-ঢেকে খান?
একজন রোজাদার ভদ্র মহিলাকে সম্মান জানায়ে উনারা কি নিজের খাবার প্রণালী স্যাক্রিফাইস করে থাকেন?
আস্থা খাঁটি মধু কিনতে ভিজিট করুন www.eSodai.com.bd/
ReplyDelete