মহাপুরুষ শ্রী রামকৃষ্ণের জীবন কথা - Voice Of Sanatan
Vedic Video!Subscribe To Get Latest Vedic TipsClick Here

সাম্প্রতিক খবর

Voice Of Sanatan

সত্যের সন্ধানে অনুসন্ধান

Post Top Ad

মহাপুরুষ শ্রী রামকৃষ্ণের জীবন কথা



ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার  কামারপুকুর গ্রামে শ্রীরামকৃষ্ণের জষ্ম ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারি ৷তার পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা চন্দ্রমণি দেবী৷ ক্ষুদিরাম শিশুপুত্রের নাম রাখেন গদাধর ৷এই গদাধরই পরবর্তীকালে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস নামে জগদ্বিখ্যাত হন৷

বালক গদাধর দেখতে ছিলেন খুবই সুন্দর ৷সদা প্রসন্ন মনোভাব তার৷  প্রকৃতিকে খুবই ভালোবাসতেন৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করতো ৷ আকাশে উড়ন্ত বলাকার ঝাঁক দেখে মাঝে মাঝে  তিনি ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়তেন৷  বাধাধরা লেখাপড়ায় তার মন ছিলো না৷ কিন্তু ভজন কীর্তনের প্রতি খুব আকর্ষন  ছিল৷ লোকমুখে শুনে শুনে তিনি বহু স্তব স্তোত্র এবং রামায়ন মহাভারত এর কাহিনী আয়ত্ত  করে ফেলেছিলেন৷

পিতার মৃত্যুর পর  গদাধরের জীবনে এক অদ্ভুদ পরিবর্তন আসে৷ তিনি কখনও শ্মশানে গিয়ে বসে থাকেন৷ কখনও বা নির্জনে আম বাগানে গিয়ে সময় কাটান৷ সাধু বৈষ্ণবদের  দেখলে কৌতুহল ভরে তাদের আচরন লক্ষ করেন ৷ তাদের নিকট ভজন শেখেন৷
এক সময় গদাধর দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে আসেন ৷ তার বড় ভাই রামকুমার মন্দিরের পুরোহিত৷ গদাধর কখনও কখনও মায়ের  মন্দিরে ভাবতম্নয় হয়ে থাকেন৷ কখনও আবার আত্নমগ্ন অবস্থায় গঙ্গিতীরে ঘুরে বেড়ান৷


রামকুমারের মৃত্যুর  পর   গদাধর মায়ের পুজার ভার গ্রহন করেন ৷ এখানেই তার সাধন জীবনের শুরু ৷ তিনি ভবতারিনীর পূজায় মন প্রাণ ঢেলে দেন৷ মাকে শুনান রামপ্রসাধী আর কমলাকান্তের গান ৷ মা মা বলে আকুল হয়ে যান ৷তার আকুল আহ্বানে একদিন  মা ভবতারিনী জ্যৌর্তিময় রুপে আবির্ভূত হন৷

এ সময় গদাধরের জীবনে ঘটে আরেক পরিবর্তন৷ ভাবের আবেশে  তিনি উম্মাদের ন্যায় আচরণঅকরেন সবার সাথে৷ ক্রমে ক্রমে  তার উম্মাদনা বেড়ে যায়৷ এ খবর পেয়ে মা চন্দ্রমণি তাকে বাড়ি নিয়ে যান৷ ৷ এবং রাম মুখুজ্যের মেয়ে সারদা দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে দেন৷

বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই গদাধর দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে ফিরে আসেন৷ আবার তার মধ্যে দিব্য উম্মাদনার ভাব দেখা যাই ৷ এ সময় অর্থ্যাৎ ১৮৬১ সালের শেষভাগে সিদ্ধা  ভৈরবী যোগেশ্বরী দক্ষিণেশ্বরে  আসেন৷  গদাধর তাকে গুরু মানেন এবং তান্ত্রিক  সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন৷ এই ভৈরবীই গদাধরকে  অসামান্য যোগী এবং অবতার পুরুষ বলে আখ্যয়িত করেন৷

এরপর গদাধরের সাধন জীবনে আসেন সন্নাসী তোতাপুরী৷সন্ন্যাস মন্ত্রে দীক্ষিত করে তিনি গদাধরের নাম রাখেন শ্রী রামকৃষ্ণ ৷ শ্রীরামকৃষ্ণ হিন্দুধর্মের বিভিন্ন শাক্ত ,বৈষ্ণব , তান্ত্রিক , প্রভৃতি মতে সাধনা করেন৷ এবং সিদ্ধিলাভ করেন ৷ তিনি বলেন নিষ্ঠার সঙ্গে সাধনা করলে সব পথেই ঈশ্বরকে লাভ করা যায়৷  তার উপলব্ধ সত্য হলো --যত মত তত পথ ৷অর্থ্যাৎ পথ বহু হলেও লক্ষ্য  এক এবং লক্ষটি হলো ঈশ্বর লাভ ৷

শ্রী রামকৃষ্ণের এই সাধনা  ও তার  পরমতসহিষ্ণুতার  কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল ৷ ফলে  অনেক জ্ঞানী গুণী  দক্ষিণেশ্বরে আসতে লাগলেন৷  একদিন এলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত৷ তিনি ঈশ্বর দেখেছেন এমন ব্যক্তিকে খুজছিলেন৷ নরেন্দ্রনাথ সরাসরি শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রশ্ন করলেন আপনি কি ঈশ্বর দেখেছেন? উত্তরে শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন -- হ্যা নিশ্চয় দেখেছি৷ এই তোকে যেমন দেখছি৷ তোকেও দেখাতে পারি৷ নরেন্দ্রনাথ  শ্রীরামকৃষ্ণের   কৃপায় ঈশ্বর দর্শন  করে ধন্য হলেন৷  এবং রামকৃষ্ণের থেকে দীক্ষা নিলেন৷ নরেন্দ্রনাথই হলো শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রেষ্ঠ শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ৷ পরম শ্রীরামকৃষ্ণের বানী শুধু মুখের কথা নয় সেগুলো তার জীবন চর্চায় রূপায়িত সত্য ৷১৮৮৬ সালে  ১৫ই আগষ্ট এই মহাপুরুষ পরলোকগমন করেন৷

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

আপনার বিজ্ঞাপন দিন।