
মহাদেব বা শিব বলতেই আমাদের চিত্তজগৎ একটি মূর্ত্তির উদয় হয় যিনি যোগাসনে উপবিষ্ট, বাঘের ছাল পরিহিত, ত্রিশুল ও ডমরুধারী, গলায় তার সাপ ইত্যাদি।
কিন্তু এমন একটি মানুষ আমরা ছবির পাতায় এবং পাথর বা মাটির প্রতিমার মধ্যে ছাড়া তো বাস্তবে দেখতে পাই না। অথচ বহুকাল থেকেই দেশে সাড়ম্বরে শিবপূজা চলে আসছে। শিব উপাখ্যান নানাভাবে ছড়িয়ে আছে পুরাণে, গাথায়, কাব্যে, শিল্পকলায়। ভারতে এক সুবিপুল জনসমাজ শৈবকৃষ্টির অনুশীলন নিয়ে চলেছে।
তাহলে এই শিব মূর্তির রহস্য কি?
পৌরাণিক সকল দেবতার মূর্তি আসলে বাস্তব জীবনে একটি নির্দিষ্ট ব্যাক্তিত্বের প্রতিক, দিব ধাতু দীপ্তি থেকে দেবতা শব্দের উদ্ভব। ইস্টা,সাধনা,কর্ম ও লোকসেবার ইত্যাদি ভিতর দিয়ে যারা দীপ্তিমান চরিত্রের অধিকারী হয়ে উঠেছেন তারা মানুষের মধ্যে দেবতা বলে পরিগণিত হয়েছেন।শিবমূর্তি তেমনি কতগুলি নির্দিষ্ট ব্যাক্তিত্বের সমাহার, আর যারা সঠিক ভাবে শিবভক্ত হন তাদের মধ্যে এইসব ব্যাক্তিত্বের প্রকটতা গুলি সুন্দর ভাবে দেখা যায়।
তাহলে কি শিব কি কোনো ঈশ্বর নয়?
শিব শব্দের উৎপত্তি শী-ধাতু(শয়ন)থেকে।তার মানে, সবাই এবং সব কিছু যার মধ্যে শায়িত বা অধিষ্ঠিত, যিনি সবারই আশ্রয়। আর বিশ্বব্রহ্মান্ড সমস্থ কিছুর আশ্রয় অর্থ্যাৎ পরমব্রহ্ম স্বরূপ অর্থ্যাৎ নিরাকার ঈশ্বর।যিনি সমস্থ গুনের (ব্যাক্তিত্বের)আধার। এই দর্শন কে ভালো ভাবে বোঝার জন্য শঙ্করাচার্য্যের অদ্বৈতবাদের মূল ভাবার্থ বুঝতে হবে। (শঙ্করাচার্য্যের অদ্বৈতবাদ)
শঙ্করাচার্য্য বিশ্বসত্তাকে অবিভাজ্য এবং এক কল্পনা করেছেন বলেই তাঁর মতবাদকে অদ্বৈতবাদ বলা হয়| তিনি শিক্ষা দিলেন – ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা জীবো ব্রহ্মৈব নাপরঃ – অর্থাৎ ব্রহ্ম সত্য, এই বিশ্ব মিথ্যা এবং জীবাত্মা ও ব্রহ্ম এক এবং অভিন্ন| এই যে জগৎ প্রত্যক্ষ হচ্ছে যা পরিবর্তনশীল এবং যা নাম ও রূপ এই দুয়ের সমন্বয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা ভ্রম মাত্র যেমন রজ্জুতে সর্পভ্রম| এই ভ্রম ব্রহ্মের মায়াশক্তির প্রভাব। একই কথা উল্লেখ আছে শ্রীমদভগবদগীতা ১৮.৬১
ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি ।
ভ্রাময়ন সর্বভূতানি যন্ত্রারূঢ়ানি মায়রা ।।
হে অর্জুন! পরমেশ্বর ভগবান সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থান করছেন এবং সমস্ত জীবকে দেহরূপ যন্ত্রে আরোহণ করিয়ে মায়ার দ্বারা ভ্রমণ করান।
অর্থাৎ আমাদের এই ভ্রম বা ভুলের কারণ হল মায়া| এই মায়া তত্ত্বও অদ্বৈতবাদের একটি অবিভাজ্য অংশ| এইজন্য এই মতবাদকে মায়াবাদ নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে|
শঙ্করাচার্য্যের মতে ব্রহ্ম সকল অবস্হাতেই একমেবাদ্বিতীয়ম্ অর্থাৎ ব্রহ্ম এক এবং অদ্বিতীয়| কোন অবস্হাতেই তিনি বহু নন| ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যে জগৎ তা ব্রহ্ম হতে পৃথক নয়; তাকে আমরা ভুল করে বহু আকারে দেখি| শঙ্করাচার্য্যের মতে এই যে দেখার ভুল তার কারণই হল মায়া| মায়া শক্তিটির এমনই ক্ষমতা আছে যা আসল জিনিষটির প্রকৃত রূপকে আবৃত করে রাখে এবং তার বিকৃত রূপটিকে প্রকট করে| সুতরাং দৃশ্যমান বিশ্ব ব্রহ্মের উপরেই প্রতিষ্ঠিত, তাই ব্রহ্ম| কিন্তু তাঁকে দেখার ভুলে আমরা বহুরূপে দেখি| শঙ্করাচার্য্য ব্যাখ্যা করেছেন যে ক্ষর হল জীবজগৎ| এর সর্বদা ক্ষরণ বা ক্ষয় হচ্ছে| আর অক্ষর হল কূটস্হ – জগতের সব কিছুর উৎপত্তির বীজ| শঙ্করাচার্য্যের মতে এটিই মায়া| এই কারণ-রূপিণী মায়া আর কার্য্যরূপী জীবজগতের উপরে আছেন উত্তম পুরুষ যিনি পরমাত্মা| শঙ্করাচার্য্যের মতে অজ্ঞানতাই হল দ্বৈতভাবের উৎপাদক| এই দ্বৈতভাব হতেই সকল কর্ম হয়| দ্বৈতভাব নাশ হলেই নিষ্ক্রিয় আত্মা প্রতিষ্ঠিত হয় আর তাহলেই কর্মসন্ন্যাস হয়| তখনই মানুষের আত্মজ্ঞান লাভ হয়, আর এই আত্মজ্ঞানকে মোক্ষ বলে। একই জিনিস গীতায় উল্লেখ আছে-
শ্রীমদভগবদগীতা ৫.১৭
তদ্বুদ্ধয়স্তদাত্মানস্তন্নিষ্ঠাস্তৎপরায়ণাঃ ।
গচ্ছন্ত্যপুনরাবৃত্তিং জ্ঞাননির্ধূতকল্মষাঃ ।।
“যাঁর বুদ্ধি পরমেশ্বর প্রতি উন্মুখ হয়েছে, মন তার চিন্তায় একাগ্র হয়েছে, নিষ্ঠা পরমেশ্বরে দৃঢ় হয়েছে এবং যিনি তাকে তাঁর একমাত্র আশ্রয় বলে গ্রহন করেছেন, জ্ঞানের দ্বারা তাঁর সমস্ত কলুষ সম্পূর্ণরূপে বিধৌত হয়েছে এবং তিনিই জন্ম-মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছেন বা মোক্ষ লাভ করেছেন”
শিব শব্দটির অর্থ কি?
শিব শব্দের অর্থ মঙ্গল। তাই প্রতিটি মঙ্গলময় জিনিস বা ব্যাক্তিত্ব হল শিবস্বরূপ। আর মঙ্গলকে আশ্রয় না করে কইজন বাঁচতে পারে? তাই শিব সবারই আশ্রয়স্থল। তেমনি শিব ব্যাক্তিত্বের ব্যাক্তি মঙ্গলময় ও আশ্রয়দাতার প্রতিক।
শিবের শম্ভু নামের তাৎপর্য কি?
তার আরেক নাম শম্ভু। শম মানে কল্যাণ এবং ভূ-ধাতু মানে হওয়া। যিনি কল্যাণরূপী হয়ে আছেন বা মূর্ত্ত কল্যাণ, তিনিই শম্ভু।কিভাবে প্রাণীগনের কল্যান করতে হয় তা তার আচরণে নিয়ত প্রকাশিত। আবার এই কল্যান করার পথে অনেক রকম বাধাবিঘ্ন এসে হাজির হয় বহু ঘাত-প্রতিঘাত আসে কারণ শুভ কাজে শতেক বাধা। সেই সব বিরুদ্ধশক্তি জয় করার ক্ষমতা একমাত্র শিব-ব্যাক্তিত্ব ব্যাক্তি স্বভাবজাত গুন কারণ তার উদ্দেশ্য মঙ্গলসাধন।সেই ব্যাক্তিত্বের ব্যাক্তি সব রকম বাধাবিঘ্ন কে জয় করার ক্ষমতা রাখে। সংসারের বিভিন্ন টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যে হলাহল রূপী অমঙ্গল ওঠে একমাত্র তিনি তা গ্রহণ করেন যাতে সংসার বিষমুক্ত থাকে। শিব মূর্তিতে শিবের নীলকন্ঠ তারই প্রতিক।
শিবের ভূতেশ নামের তাৎপর্য কি?
তাহার নাম ভূতেশ, ভূতভাবন।এখানে ভূত মানে “কাল” অর্থ্যাৎ যিনি বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যৎতেও থাকবেন। তাইতো তিনি ভূতনাথ অর্থ্যাৎ জীব আত্মা যা চিরন্তন সত্য ও শাশ্বত তার প্রভু।
নন্দী এবং ভৃঙ্গী তাৎপর্য কি?
সর্বক্ষণের জন্য মহাদেবের কাছে আছে দুটি অনুচর- নন্দী এবং ভৃঙ্গী। এরা কিসের প্রতিক? নন্দী শব্দের উৎপত্তি নন্দ ধাতু থেকে মানে আনন্দ আর ভৃঙ্গী এসেছে ভৃ-ধাতু থেকে মানে ভরণ, পোষণ ও ধারণ করা। আর এটা তো স্বাভাবিক যে মঙ্গল যাবে সেখানে তার প্রিয় অনুচর আনন্দ, ভরণ, পোষণ ও ধারণ সেখানে চলে যাবে।নন্দীর আগমনের সাথে সাথে পাই প্রেরণা অর্থ্যাৎ মানুষের মধ্যে বেড়ে ওঠা সহ্য, ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়ের গুণরাজি।অপরপক্ষে ভৃঙ্গী হল কারক। সংসারে-সমাজে চলতে হলে মানুষের এইসব ব্যাক্তিত্ব থাকা একান্ত প্রয়োজন নইলে তার কপালে সাফল্য জুটবে না।
শিবের সিদ্ধি ও গাঁজা টানার তাৎপর্য কি?
নাটক বা ছবিতে দেখা যায় নন্দী এবং ভৃঙ্গী শিবের কাছে বসে সিদ্ধি ও গাঁজা টানছে, আপনাদের মতে বলে যিনি মঙ্গলের প্রতিক তার দুই অনুচর আনন্দ,ভরণ, পোষণ ও ধারণ করার প্রতিক, তারা কিনা সিদ্ধি ও গাঁজা খাচ্ছে এটা কি বিশ্বাসযোগ্য ? এখানে সিদ্ধি ও গাঁজা হল কর্মের কৃতার্থ হওয়ার পরমান্দ তথা আত্মপ্রসাদের প্রতিক যা কোনো মাদক দ্রব্যে নয়।নন্দী আনন্দদায়ীর কারক ও ভৃঙ্গী যা ভরণ-পোষণের কারক, এই দুই বিহিত ব্যাবহার ও অনুশীলনের ভিতর দিয়েই জেগে ওঠে কার্যসিদ্ধির সৌন্দর্য্য।আর প্রকৃত শিব-ব্যাক্তিত্বই হল কার্যসিদ্ধির উৎস। তাই তো প্রকৃত শিব-ব্যাক্তিত্ব বিশিষ্ট্য ব্যাক্তি কর্মের কৃতার্থ হওয়ার পরমান্দ তথা আত্মপ্রসাদ কে সেবন করে নেশাগ্রস্থ আনন্দ লাভ করে কোনো সিদ্ধি ও গাঁজা টেনে নয়।
শিব কেনো যোগেশ্বর?
সর্বযোগের অধিপতি মহাদেব, তাই তার আরেক নাম যোগীশ্বর বা যোগেশ্বর।সকল বোধ দর্শন ও জ্ঞানতার অধিগত। সেইজন্য তার অপর নাম পশুপতি অর্থ্যাৎ জ্ঞান ও দর্শনের অধিপতি। পশু বলতে আমরা সাধারণত বুঝি জন্তু বা ইতর প্রাণী কিন্তু পশু শব্দের একটি ব্যুৎপত্তি আছে দর্শনার্থক পশ-ধাতু থেকে অর্থ্যাৎ সবিশেষ-ভাবে যিনি সব কিছু দর্শন ও বোধ করতে পারেন তিনিই পশু। সেইজন্য শিবের পশুপতি নামের মধ্যেকার পশুশব্দটি সাধারণ চলিত অর্থে নয় বরং প্রজ্ঞাবান বাক্তিত্বের বিশিষ্ট অর্থে প্রযুক্ত।
শিবপূজার বেলপাতা অপরিহার্য্য কেনো?
কারণ বেলগাছের পত্র সুমিস্ট গন্ধ ও ভেষজগুণা বলীযুক্ত। প্রাচীনকাল থেকে আর্যরা আয়ুর্বেদে বেলপাতার ব্যবহার করে আসছে এমন কি চরক, সুশ্রুতের গ্রন্থে বেলপাতার ব্যাবহার উল্লেখ আছে। তাই প্রাচীনত্ব, সুমিস্ট গন্ধ ও ভেষজগুণা বলীযুক্ত এই বৈশিষ্ট্যের জন্য বেলপাতা গুরুত্বপূর্ণ।
শিব কেনো বৈদ্যনাথ?
সুস্থদেহ ও মন নিয়ে কিভাবে সপরিবেশ বেঁচে থাকা যায়, সে-চলার কৌশল শিবের অধিগত। তাই তার অপর নাম বৈদ্যনাথ। বৈদ্য তিনিই যিনি বিদ্যমানতার মরকোচগুলি জানেন যা জীবনকে অসুস্থ করে তোলে, তার কারণ অপসারণ করে জীবনকে সুস্থ ও সুস্থ করে তোলে তাকে বৈদ্য বলে। মঙ্গলময় শিবের মধ্যে বৈদ্যনাথত্ব স্বতঃ উৎসারিত থাকে।
শিবের মূর্তির অর্থ কি?
মহাদেবের গাত্রবর্ণ রজতগিরিনিভ অর্থ্যাৎ রুপালী পর্বতের ন্যায় শ্রভ্রবর্ণের। সাদা কেন? কারণ সাদা হল সমস্ত রঙের সমাহার।সমস্ত বর্ণ সকল বিভিন্নতা তত্ত্ব ও তথ্যের সার্থক সমাহার তিনি।তারাই প্রতিক ঐ শ্বেতবর্ণ।
মহাদেবের কন্ঠে সাপের মালা, তাই তার আরেক নাম ফণিভূষণ। গলায় ওই সাপের অস্তিত্বকে নানা জনে নানা দিকে দিয়ে ব্যাখা করেছেন।এই সাপ হিংস্র ব্যাক্তিতের প্রতিক। সমাজে সাপের মত চরিত্রের অনেক লোক আছে। মহাদেব তাদের প্রেমে বশীভূত করে কাছে রেখে দেন যাতে তারা বাইরে যেয়ে বৃহত্তর সমাজের ক্ষতি করতে না পারে, আবার তাদের ভিতরেও যে সত্তাপ্রীতি আছে তা উসকে দিয়ে ঐ অমনতরদের দ্বারা লোক মঙ্গল য টুকু করানো সম্ভব তাও করিয়ে নেন। এই হল শিবেভাবের বৈশিষ্ট্য। তিনি যে ভূতপতি, ভূতেশ্বর। কাকে বা দেবেন তিনি? সমস্ত অসৎকে তিনি সৎ এর এবং সমস্ত অশুভকে শুভে নিয়ন্ত্রিত করেন।
মহাদেবের পরিধানে ব্যাঘ্রচর্ম, কারণ ব্যাঘ্র হল সাহসী, বীর্য্যবান অথচ কৌশলী প্রাণী। ব্যাঘ্রের চর্ম ঐ গুণগুলির দ্যোতক প্রয়োজন হয় প্রতিপদে। তাই ঐ গুণগুলি শিব-চরিত্রের সহজ সম্পদ।
মহাদেবের মস্তকে চন্দ্রের একটি অংশ অধিষ্ঠান, এই চন্দ্র হল শান্তি ও নির্মলের প্রতিক এবং অর্ধচন্দ্র যা চলমান সময়ের প্রতিক। তাই, তার অপর নাম চন্দ্রেশ্বর চন্দ্রের স্থান মহাদেবের মস্তকে কারণ পৃথিবীতে জীবনপ্রবাহ সচল রাখতে চন্দ্রের ক্রিয়া অপরিসীম।চন্দ্রের আকর্ষণে সমুদ্রে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি হয়।মঙ্গল মানেই তো জীবন-বৃদ্ধি যাতে উচ্ছল হয়ে চলে।
মহাদেবের জটা থেকে গঙ্গার জলধারা যা জ্ঞান ও পবিত্রতার প্রতিক। আর এটা বিজ্ঞানসম্বত ভাবে প্রমাণিত গঙ্গার জলের জীবানুনাশক গুণ আছে যা গঙ্গার পবিত্রতার প্রতিক।
রুদ্রাক্ষ যা শিবের অলঙ্কার যা তিনি সর্বদা পড়ে থাকেন! কিন্তু শুধু একমাত্র এই রুদ্রাক্ষই কেনো? রুদ্রাক্ষ মানে “রুদ্রের অশ্রু” পৌরানিক গাথা অনুসারে ইহা শান্তি ও পবিত্রতার প্রতিক। এর আগে যেমন গঙ্গা জলের বিজ্ঞানসম্বত গুণ বললাম যার জন্য গঙ্গার জলকে পবিত্র মানা হয়, ঠিক তেমনি রুদ্রাক্ষের বিজ্ঞানসম্বত গুণ আছে যা ধ্যানের সময় মনে শান্তি আনতে সহায়ক, যার জন্য যোগীরা তাদের গলাই রুদ্রাক্ষের মালা পড়ে। আধুনিক রিসার্চ বলছে রুদ্রাক্ষে Electromagnetic, Paramagnetic, Diamagnetic and Dynamic Polarity ধর্ম আছে, বিভিন্নমুখী রুদ্রাক্ষের ক্ষেত্রে এর মানগুলো ভিন্ন হয়। হৃৎপিন্ডের চারিদিকে যদি এই আসল রুদ্রাক্ষের মালা পড়া হয় তবে তার দ্বারা মস্তিকের ডোপামিন ক্ষরণকারী নিউরোন থেকে ডোপামিন ক্ষরণ হ্রাস পাই, যার ফলে মনে হালকা শান্তিদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ডোপামিন মূলত এড্রিনারজিক নিউরোন থেকে এড্রিনালিন ক্ষরণ কে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া রুদ্রাক্ষ রক্তে সেরোটনিনের মাত্রা হ্রাসে সহায়ক।যার ফলে মনে হালকা শান্তিদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি হয়।
ত্রিশূল তার অস্ত্র নিয়ত শোভা পায় তার হস্তে, তাই তিনি শূলপাণি, ঐ অস্ত্র পরম মঙ্গলময় যিনি তার সত্তাসংরক্ষণী অসৎ নিরোধী মহাশক্তির প্রতিক। ত্রিশূলের ৩টি ফলা সত্ব-রজ-তম তিনটি গুনের প্রতিক।
শিবের ৩ নয়ন যা সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের প্রতিক। তিনিই সংহার কারী রুদ্র। ত্রিশূলের সঙ্গেই থাকে শিবের নিত্যসাথী ডমরু। এই ডমরুর তাৎপর্য্য কি ? ডমরু হল শব্দের বিভিন্ন নাদ এর প্রতিক, সংস্কৃত ব্যাকরণ-প্রণেতা মহামুনি পানিনি ছি্লেন শিবভক্ত, তিনি মহাদেবের আরাধনা করতেন ৪৫ বার ডমরু ধ্বনি করে, এক একবার এক এক রকম নাদ সৃষ্টি হয়, পরে ঐ নাদগুলো্কে তিনি সুত্রাকারে আবির্ভূত করেন, সুত্রগুলো এই রকম - অইউণ। ঋলৃকৃ। কপয়। হল।। পাণিনি সুত্রগুলির নাম রাখেন শিবসুত্র। এই শব্দরাজিই হচ্ছে সমস্ত সংস্কৃত স্বর ও ব্যাঞ্জনবর্নের সমষ্টি রূপ। তারপর সেগুলি সঙ্গতি সহকারে বিন্যস্ত করে তিনি রচনা করলেন তার মৌলিক গ্রন্থ “অষ্টাধ্যায়ী”। কথিত আছে বিষ্ণুর অনুরোধে তিনি পঞ্চমুখীশিব রূপ ধারণ করেন এই পঞ্চমুখ হল পঞ্চভূতের প্রতিক।
কামদেবের ভস্মীভূত হওয়ার অর্থ কি ?
কথিত আছে শিবের তৃতীয় নয়ন থেকে ক্রোধবহ্নি নির্গত হয়ে মদনকে (কামদেবকে) ভস্মীভূত করেছিলেন। এর তাৎপর্য্য কি ? এই তৃতীয় নয়ন হল ধ্বংশ বা প্রলয়ের প্রতিক, এখনে মদন হল “কামজ মোহের আকর্ষণ” তিনি মহাযোগী তাই তাকে “কামজ মোহের আকর্ষণ” আচ্ছন্ন করতে পারে না, মন যার আজ্ঞাচক্রে সদা নিবদ্ধ, প্রবৃত্তির কোনো মোহ তাকে কখনও আচ্ছন্ন করতে পারে না, মদনের ভস্মীভূত হওয়া তার প্রতিক। যিনি মহাযোগী তাকে কখনো দুঃখের কবলে পড়তে হয় না। সে নিজেও আনন্দে থাকে এবং অপরকেও আনন্দ বিলাতে পারে। তিনিই আবার বানেশ্বর, বান মানে বিস্তার। এই বিশাল বিস্তৃতির অধীশ্বর যিনি তিনিই বানেশ্বর।
শিবের ইস্ট-গুরুরুপ
এমনতর গুনান্বিত যে পরম শিব, তিনি মাঝে মাঝে পৃথিবীতে ইস্ট-গুরুরুপে দৃশ্যমান হয়। শিবত্ব ঘনীভূত হয়ে প্রকাশ পাই সেই ব্যাক্তির মধ্যে। তিনি হলেন সাক্ষাৎ গুরু রুপে শিব। যার জীবনে লক্ষ্য সদগুরু লাভের চেস্টা এবং যে অচ্যুত নিস্ঠাসহ তার অনুসরণ করে চলে, তারই মধ্যে শিববোধ জাগ্রত হয় এবং তারই শিবপূজা সার্থক হয়।
শিবপূজার তাৎপর্য কি?
শিবপূজা করলে শিবের অভিপ্রেত চলনে চললে মানুষের মৃত্যুভয় থেকে ত্রাণ লাভ করে।মৃত্যুঞ্জয় শিবের আরেক নাম।
ঋগ্বেদ ৭.৫৯.১২ - মহামৃত্যুঞ্জয়ী মন্ত্র
“ওঁ ত্র্যম্বকম য়যমহে
সুগন্ধিম পুষ্টি বর্ধনাম
উর্বরুকুম বন্ধনান
মৃত্যুর মোক্ষেয়া মমৃতাত(ম অমৃতাত)ওঁ”
“হে রুদ্র, আমরা তোমার বন্দনা করি।তুমি জন্ম,জীবন ও মৃত্যুত্রয়ীর জ্ঞানদৃষ্টির অধিকারী।তুমি আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সুন্দর পরিবেশ ও পুষ্টিকর খাদ্যের যোগানদাতা।তুমি সকল ভয়ঙ্করব্যধি হতে ত্রানকারী।আমাদের মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তিদান কর,অমৃতত্ত্ব থেকে নয়।
*ত্র্যম্বকম- ত্রিনেত্রী, যাহা জন্ম, জীবন ও মৃত্যুর প্রতিক।
শিব-উপাসনা যে ঠিকমত করে, তার অন্তর হয়ে ওঠে অভী ভাবনায় উজ্জীবিত। প্রকৃত ধর্মাচরণই মানুষকে অভী বা ভয়শূন্য করে তোলে। তথাকথিত হাজার রকমের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভয় বা আতঙ্ক তাকে সঙ্কুচিত ও ত্রস্ত করে তুলতে পারে না। সে জানে শরীরের বিনাশ হলেও আত্মার বিনাশ হয় না। আত্মা চির-অবিনশ্বর এবং প্রতিটি মানুষই সেই বিশ্বাত্মারই অংশবিশেষ। সদগুরুর উপর গভীর টান মানুষকে এমনতর মৃত্যুভয়-অতিক্রমী সাহসী অথচ কল্যাণপথিক করে তোলে।
কথিত আছে, শিব অতিশীঘ্র পরিতুষ্ট হন বলে তার আরেক নাম আশুতোষ।কিন্তু এখানে আছে একটু রহস্য। শুধু মুখে ডাকলে তার সাড়া পাওয়া যায় না, তিনি ব্যাক্ত হন সদগুরু রূপে, হতে পারে তা নিজের মনে বা অন্য কোনো কাছের মানুষের মনে, তার দেখানো নির্দিষ্ট পথ অনুসরন করে সেই ভক্তের মধ্যে শিববোধ জাগ্রত হয় এবং তারই শিবপূজা সার্থক হয়। অতি অবশ্যই সেই ভক্তকে আগে সঠিক সদগুরু বৈশিষ্ট্য জানতে হবে।
শিব লিঙ্গ কি ?
শিব শব্দের সংস্কৃত অর্থ মঙ্গল আর লিঙ্গ শব্দের সংস্কৃত অর্থ প্রতিক। তাই শিব লিঙ্গ হল “মঙ্গলের একটি প্রতিক”। প্রতিটি শিব লিঙ্গএর ৪টি অংশ নিয়ে গঠিত ১.ব্রহ্মপাদ ২.বিষ্ণুপাদ ৩.যোনি ৪.লিঙ্গ। এখানে যোনি অর্থ্যাৎ কোনো স্ত্রী যৌনাঙ্গ নয়, যোনি শব্দের ৫ টি সংস্কৃত অর্থ আছে এর মধ্যে একটি হল “ধারক”। এই যোনি হল মা আদিশক্তির বা প্রকৃতির প্রতিক। আর ঋষি কপিলের সাংখ্য দর্শন অনুসারে লিঙ্গ অনাদিপুরুষের প্রতিক। তাই দর্শন অনুসারে শিবলিঙ্গ হল শিব-শক্তির প্রতিক বা অনাদিপুরুষ ও আদিশক্তির প্রতিক বা পুরুষ ও প্রকৃতির প্রতিক।
শিবলিঙ্গে বা শিবের মাথাই জল বা দুধ ঢ়ালা হয় কেনো ?
জল যা জীবনের প্রতিক দুধ যা শান্তির ও নির্মলের প্রতিক।শিবলিঙ্গে বা শিবের মাথাই জল বা দুধ ঢ়ালার তাৎপর্য্য হল ব্যাক্তিগত কাম, ক্রোধ ও লোভ কে নিয়ন্ত্রণ রাখা। কিন্তু একটি মূর্তির উপর পয়সা খরচ করে দুধ ঢ়ালা কতটা যুক্তিকর? যার যে রকম সাধ্য সে সেই ভাবে শিবপূজা করবে, এখানে কোনো বাধ্যতা মূলক নাই যে একমাত্র দুধ ব্যবহার করতে হবে।মূর্তির মাথাই দুধ না ঢ়েলে যদি কোনো অভুক্ত শিশুকে সেই দুধ দান করা হয় তবে সেটা কেমন হবে ? এটাই হল প্রকৃত শিবসেবা কারণ জীব সেবা মানেই শিব সেবা, একমাত্র শিব-ব্যাক্তিত্ব ব্যাক্তির বা যার মধ্যে শিববোধ জাগ্রত তার স্বভাবজাত গুন জীবের মঙ্গলসাধন। শিবলিঙ্গে বা শিবের মাথাই জল বা দুধ ঢ়েলে কিভাবে আমি কাম, ক্রোধ ও লোভ থেকে মুক্তি পাবো ? কোনোদিনোও পাবে না যদি না নিজ সংকল্পবদ্ধ হওয়া যায়, শিবলিঙ্গে বা শিবের মাথাই জল বা দুধ ঢ়ালা তাৎপর্য্য হল সেই সংকল্পবদ্ধ হওয়ার সাক্ষি কারণ শিবপূজার মূল উদ্দেশ্য হল নিজের মধ্যে বা নিজের জীবনে সেই শিবভাব কে প্রাপ্ত করা।
হিন্দু কুমারী মেয়েরা শিবব্রত পালন করে শিবের মতো স্বামী পাওয়ার জন্য এটা কিভাবে সম্ভব?
যাদের সঠিক রূপে শিবের ব্রত সম্পন্ন হয় একমাত্র তাদের জন্য সম্ভব, সঠিক রূপে ব্রত মানে অনুষ্ঠান আড়ম্বর কে বোঝাই না। ব্রত শব্দটি এসেছে বৃ-ধাতু থেকে যার অর্থ বরণ করা অর্থ্যাৎ শিবত্বকে বরণ করে নেওয়া সেই শিবত্ব কে আপন করে নেওয়া অর্থ্যাৎ নিজের মধ্যে শিবত্বের গুনগুলিকে ফুটিয়ে তোলা। এর জন্য বছরের শুধুমাত্র শিবরাত্রী তে নয় সারাজীবনের প্রতিটি মুহূর্ত্তের জন্য। এছাড়া ব্রত শব্দের উৎপত্তি ব্রজ-ধাতু থেকে যার অর্থ চলা অর্থ্যাৎ শিবত্বকে বরণ করে সেই অনুসারে চলা। শিবব্রত পালনের উদ্দেশ্য হল এটাই।
এছাড়া না খেয়ে শিবের মাথায় হাজার ঘড়া জল দুধ ঢ়াললেও শিবত্বর প্রাপ্তি কোনো মতে সম্ভব নয়। আর যে নারীর এই শিবত্ব লাভ হয়েছে তার স্বগুনে্র দ্বারা এই সমাজে হাজার হাজার পুরুষের মধ্যে থেকে সঠিক শিবত্ব যুক্ত পুরুষ কে খুঁজে পাওয়ার আত্মজ্ঞান লাভ করে। কথাই আছে রত্নে রত্ন চেনে, আর প্রতিটি অবিবাহিত নারীই চাইবে এমন এক পুরুষ কে পেতে যে তাকে প্রকৃত ভাবে ভালোবাসে, অন্য নারীর শারীরিক সৌন্দর্য যাকে আকর্ষন করতে পারে না, যার প্রচুর নাম যশ আছে, প্রকৃতিতে যে মঙ্গলসাধনকারী, যার উপস্থিতে তার সমস্ত মুসকিল আসান হয়, যে সাক্ষাৎ সদগুরুর প্রতিক, সুস্থদেহ ও মনের অধিকারী, যে সাহসী, বীর্য্যবান, কৌশলী এতোসব গুনের অধিকারী কোনো পুরুষ কে কোন অবিবাহিত নারী তাকে স্বামী হিসাবে পেতে চাইবে না? আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা সব অবিবাহিত মেয়েরা তাদের মতামত দেক।
শিবের উপবাসের তাৎপর্য কি ?
শ্রীমদভগবদগীতা ১৮.৬২
তমেব শরণং গচ্ছ সর্বভাবেন ভারত ।
তৎপ্রসাদাৎ পরাং শান্তিং স্থানং প্রাপ্স্যসি শাশ্বতম ।।
হে ভারত! সর্বতোভাবে তাঁর (পরমেশ্বর) শরণাগত হও। তাঁর (পরমেশ্বর) প্রসাদে তুমি পরা শান্তি এবং নিত্য স্থান প্রাপ্ত হবে (মোক্ষ)।
যদি ভাবেন ভাত খাবো না লুচি খাবো লুচি খাবো না ফল, মিস্টি, দুধ, দই খাওয়া কে উপবাস বলে, তবে আপনার ধারণা ভুল, তাকে উপবাস বলে না। চলতি হিন্দু সমাজে যে উপবাস করা হয় তার উদ্দেশ্য হল “আহার-সংযমের দ্বারা শরীরটা হালকা থাকে, বেশি কর্মকরার আগ্রহ জাগে, মনের একাগ্রতা বৃদ্ধি পাই, যার ফলে উপবাসে্র দিনে সেই ব্যাক্তি যে যে কাজ গুলো করতে চাই তা সহজে করতে পারে। এই যেমন ষষ্ঠীর উপবাসের কিছু নিয়ম যা দেবীভগবত পুরাণে বর্ণিত আছে- চন্ডিপাঠ করা, ভোগ রান্না করে দেবীকে উৎসর্গ করা এবং সেই ভোগ কিছু বালক-বালিকাদের মধ্যে বিতরণ করা, বাড়ির বড় মহিলাদের পা ধুয়িয়ে দিয়ে তাদের ভোগ দান করা, সধবা মেয়েদের সিঁদূর দান করা, এইগুলো সব ষষ্ঠীর উপবাসে মেয়েদের কর্ম।
তবে আজকাল ষষ্ঠীর উপবাসে এইসব সঠিক পৌরাণিক নিয়ম গুলো আমি আর দেখতে পাই না! দেখতে পাই কিছু কাল্পনিক নিয়ম। উপবাসের উপ শব্দের অর্থ নিকট অর্থ্যাৎ নিজ আরাধ্যের নিকটে বাস করা, এখন আমি যদি কারো নিকটে বাস করতে চাই অবশ্যই তাঁর মনের মত হয়ে থাকতে হবে নইলে আমি তার নিকট অস্বস্তি বোধ করবো, তার প্রতি প্রীত হবো না। ঠিক তেমনি শিবসান্নিধ্যে থাকতে গেলে মনটা শিবমুখী করে একাগ্র করে রাখতে হবে। আর এটা তখনি সম্ভব যখন আমি নিজের মধ্যে সেই শিবত্বের গুন গুলো প্রকট করতে পারবো কারণ আগুনে কাছে আগুন থাকতে পারবে আগুনের নিকট শীতল জল নয়। শিবের উপবাসের তাৎপর্য হল এটাই মন হবে শিবমুখি আর কর্ম ও গুণ হবে শিবত্ব ন্যায়। নারীই হোক বা পুরুষ যারাই এই ব্রত উপবাস ঠিকমত করে, অন্তর তাদের হয়ে উঠে শুদ্ধ,মঙ্গল-বিকিরণ কারী।
তাদের জীবনে লালসার উগ্রতা স্তিমিত হয়ে আসে। প্রত্যেকেই তার বৈশিষ্ট্য অনুয়ায়ী হয়ে ওঠে মহাযোগী মহাদেবের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ। আর এই হওয়া অনুপাতিক প্রাপ্তিও ঘটে প্রতিপ্রত্যেকের জীবনে। উদাহরণ দিচ্ছি- ষষ্ঠীর উপবাসের তাৎপর্য। ষষ্ঠী যা কারক হল মা অন্নপূর্ণা ও সতীসাবিত্রী ও জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী শুক্র গ্রহের। আমি আগে যা উল্লেখ করেছি, অন্নদান মা অন্নপূর্ণার কারক কর্ম, সধবা মেয়েদের সিঁদূর দান যা সতীসাবিত্রীর কারক কর্ম এবং ষষ্ঠীর উপবাসে দই খাওয়া হল জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী শুক্র গ্রহের কারক কর্ম। এই ভাবে শিবের উপবাসে শিবত্বের কারক কর্ম করতে হবে।তবে তার শিবের উপবাস সার্থক হবে।
সবশেষে এটাই বলবো দেবতাদের মধ্যে যেমন শিব মহান তার জন্য তার আরেক নাম মহাদেব। ঠিক তেমনি বাকি দেবতার ভক্তদের মধ্যে সঠিক(ডুব্লিকেট নয়)শৈবভক্ত মহান অর্থ্যাৎ যার মধ্যে সঠিক ভাবে শিবত্বের গুণগুলো প্রকট ভাবে দেখা যায়। অবশ্য বর্তমান দিনে এই টাইপের পুরুষ কে কদাচিৎ দেখা যায়।
No comments:
Post a Comment