কাশফুলের শুভ্রতায় অপরুপা ধরলার চর - Voice Of Sanatan
Vedic Video!Subscribe To Get Latest Vedic TipsClick Here

সাম্প্রতিক খবর

Voice Of Sanatan

সত্যের সন্ধানে অনুসন্ধান

Post Top Ad

কাশফুলের শুভ্রতায় অপরুপা ধরলার চর




 রতি কান্ত রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: শরৎতের  নীল অাকাশে পানি বিহীন সাদা মেঘের ভেলা অার কাশফুলের শুভ্রতা।

 বর্ষাকে বিদায় জানিয়ে সাদা তুলোর মতো মেঘের সঙ্গেঁ কাশফুল মিশে একাকার হয়ে প্রকৃতিতে ছড়ায় মুগ্ধতা ও দুলতে থাকা কাশফুল যেন ঝাঁকে ঝাঁকে নৃত্যরত নর্তকী।
শরৎতের অপরুপ সাজে সেজেছে ধরলার বুকে জেগে ওঠা চরগুলি ।

ধরলার বুকে জেগে ওঠা চরগুলিতে কাশফুল মাথা তুলা মানেই বাতাসে রটে যেত পুজো অাসছে। কাশের সংখ্যা যতই বাড়তো,  ততই কমে অাসতো প্রতীক্ষার দিনগুলি । 

কুড়িগ্রাম জেলার অানাচে কানাচে কাশফুল ফুটতো কিন্তু এসব এখন অতীত। অন্য জায়গাতেও কাশের সংখ্যাও এখন হাতেগোনা।অনেকটা অভিমানে যেন হারিয়ে যাচ্ছে কাশফুল। 

শ্রী বকুল চন্দ্র বলেন, পুজো এলেই চারপাশ ভরে উঠত কাশফুলে। মনটা কেমন  হয়ে যেত।  কিন্তু এখন অার অাগের মত কাশফুল দেখি না। 
কাশফুলের গুচ্ছ দেখে শুধু মন কেমন করা নয় বরং মন হারিয়েছেনও অনেকেই। 
       
 প্রাকৃতিক রুপ সৌন্দর্য অার দৃষ্টি নন্দন কাশফুলের সৌন্দর্য অপরুপ মোহনীয় হয়ে ধরা পড়ে। প্রকৃতি প্রেমীরা নিজের ক্লান্তি ভুলে মনকে প্রফুল্ল করতে ছুটে অাসতেন কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

চিরল পাতার দুই পাশে ধারালো ছন জাতীয় ঘাস পুকুর পাড়ে , জমির অাইলে,  উচু পতিত জমিতে জম্মে। বর্তমানে ধরলা নদীর চর ছাড়া এদের দেখা পাওয়া যায় না।
ধরলার নতুন জেগে ওঠা চরে কম বেশী কাশফুল ফুটে। ধরলা নদীর চরে অাপনা অাপনি কাঁশবন এর সৃষ্টি হয়। শরৎ শেষে ফুলে বীজ সৃষ্টি  হয়ে তুলোর পাখায় বাতাসে উড়ে গিয়ে এক চর থেকে অারেক চরে কাঁশবন সৃষ্টি হয়। গাছ ও মুল দিয়েও নতুন গাছের সৃষ্টি হয়।

চারা গাছ বড় হলে কিছু অংশ কেটে গরু ও মহিষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কাশ দিয়ে গ্রামের মানুষ ঝাঁড়ু, ডালি, মাদুর তৈরি করেন। অাগে কাশ খড় দিয়ে ঘরের ছাউনি দেওয়া হত। বর্তমানে পানের বরজের বেড়া ছাউনি, বাড়ীর সিমানা বেড়া দেওয়া হয়।
কাশ গাছ কেটে কৃষক অর্থ উপার্জন করেন। শরৎতের শেষে কার্তিক মাসে কাশ গাছ কেটে মুঠা তৈরি করা হয়। প্রতি হাজার মুঠা ১২-১৩ হাজার টাকায় বিত্রুি করা হয়।

পাইকাররা ত্রুয় করে নৌকা যোগে কাশের মুঠা(বোঝা) নিয়ে যান রাজশাহী, বরিশাল, চাপাইনবাগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে। পানের বরজে ছাউনি দেওয়ার জন্য।  শুভ কাজে কাশফুল ব্যবহার করা হয়। কাশফুলের শুভ্রতা মনের কালিমা দুর করে। তাইতো শরৎতের কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগে চরমেখলি গ্রামের অাইয়ুব এর চরে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা। বিশাল কাঁশবন, রাশি রাশি কাশফুল এবং চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে মুগ্ধ বিমোহিত সবাই ।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র মো: নুর ইসলাম মিয়া বলেন, "শরৎতের কাশফুলের সৌন্দর্য অপরুপ "এখানে বেড়াতে এসে খুব ভালো লাগছে। চরের পাশেই ধরলা নদী কাঁশবনের ডোবার ভিতর পানকৌড়ি, ডাবকির লুকোচুরি। ছোট ছোট পাখির কিছির মিছির, ঘুঘু, মাছরাঙ্গাঁ, গাংচিল প্রভৃতি পাখির ডাক চরের নি:সঙ্গতাকে ভেঙ্গে অাপনার মনকে করবে বিমোহিত, মোহীত ও মুগ্ধ।

ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো: মাহাবুবুর রশিদ জানান, চাষের পরিধি বাড়াই কাশফুল কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। সেচ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এখন প্রায় সব উর্বর জমিতে

 কিছু না কিছু চাষ হয।এর ফলে কাশফুল ফুটতে পারে না।    
ধরলার চরে বর্তমানে বাড়তি জনসংখ্যার চাপে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে হারিয়ে যাচ্ছে শরৎতের শুভ্রতা কাশফুল। তার কথায়, "অাগে বেশিরভাগ জমিতে একবার চাষ হত নতুবা জমি থাকতো পতিত। এখন অার সেটা হয় না। " 

অপরুপ সৌন্দর্যময় ধরলার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও শরৎতের কাশফুলের সৌন্দর্য যেন হারিয়ে না যায় সে দাবি জানিয়েছেন প্রকৃতি প্রেমীরা।

 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

আপনার বিজ্ঞাপন দিন।