গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা১মিনিট, তুষি ও তীর্থ হঠাৎ এসে বললো বাবা Happy Birthday। তখন বুঝতে পারলাম আাজ আমার জন্ম দিন। আসলে ঘটাকরে জন্মদিন পালন আমি মোটেই সমর্থন করিনা।আমি মনে করি প্রতিদিনই আমার জন্মদিন। মানুষের জীবনে এমন একটা মূহূর্ত আসে যখন মানুষ একেবারে নিজের মুখোমুখি দাঁড়ায়। আত্মানুসন্ধান করে, নিজেকে প্রশ্ন করে, উত্তর খোঁজে, নিজেই প্রশ্নের সাথে উত্তর মিলিয়ে নেয়।
আমার জীবনেও আজ সেরকম একটা দিন, অফিসিয়ালি ও ফ্যামেলিগত ভাবে আজ আমার চুয়ান্ন বছর পূর্ণ হলো! এই দীর্ঘ সময়ে মেলা-মেশা হয়েছে অনেকের সাথে,সামাজিকতাও কম করা হয় নেই।সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে জড়িতও ছিলাম। নিতান্তই পেটের তাগিদে নয়,মনের আনন্দে চাকুরিতে এসেছিলাম দুই যুগ আগে, বেছে নিয়েছিলাম পএিকার চাকুরী। তাও আবার চট্টলদরদী মরহুম ইউসুফ চৌধুরী সাহেবের সংস্পর্শে এসে।কারণ উনি ছিলেন আামাদের পারিবারিক সুজনেষু ব্যক্তি।
পেশাগত জীবনকে পারিবারিক-সামাজিক জীবন থেকে আলাদা রাখার চেষ্টা আমার সব সময়ই ছিল। লোভ কিংবা উচ্চাকাঙ্খা মনে বারবার উঁকি দিলেও সেভাবে আমাকে ওভারপাওয়ার করতে পারেনি। পেশাগত ও সামাজিক জীবনে বরাবরই আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা বজায় রাখার চেষ্টা ছিল আমার। আজ নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ঘোষনা করতে চাই,এই চুয়ান্ন বছরে আমার পেশাগত ও সামাজিকভাবে প্রাপ্তি প্রত্যাশার চাইতেও অনেক অনেক গুণ বেশি। বিশ্বজুড়ে যখন করোনাভাইরাস- এর মৃত্যুর মিছিল, বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামেও মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, গত কয়েক দিনে অনেক চেনা-জানা মুখ চিরতরে হারিয়ে গেছে।এখন আমরা সবাই শোকাহত।
এমন আতঙ্ক, শোক আর স্বার্থপরতার নগ্ন বর্হিপ্রকাশের মধ্যেও আজ শুক্রবার(গুরু বার) থেকে আমার মোবাইল, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ফেসবুকের টাইম লাইন এবং ইনবক্সে এতো বিপুল সংখ্যক আমার ভালবাসার মানুষ আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, সন্মান আর ভালোবাসা জানিয়েছেন, যে এজন্য আমি একেবারেই অভিভূত! সবাইকে পৃথকভাবে ধন্যবাদ জানাতে না পারলেও সবার প্রতি আমার সীমাহীন কৃতজ্ঞতা, আন্তরিক ধন্যবাদ এবং নিরন্তর শুভ কামনা! ধন নয়, পদ নয়, মর্যাদা এবং আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে, আপনাদের একজন হয়েই বাঁচতে চাই।
আশাকরি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় করোনাভাইরাস মহামারী শেষ হবে, সংকট কেটে যাবে একদিন। করোনাভাইরাস -এর তাণ্ডবলীলা যতদিন থাকবে, ততোদিন সামাজিক নিরাপত্তা বজায় থাকুন, সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন-শুভকামনা সবার জন্য! আবারও সকলকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দিয়ে শেষ করছি- "মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক আর কিছু নয়, এই হোক শেষ পরিচয়!”
সবশেষে বলি- ------------------ "কাঁটায় আমার অপরাধ আছে, দোষ নাই মোর ফুলে। কাঁটা ওগো প্রিয় থাক্ মোর কাছে, ফুল নিও তোমরা তুলে। " বিনয়াবনত : তাপস কুমার নন্দী চট্টগ্রাম বাংলাদেশ ২৬,জুলাই ২০২০
No comments:
Post a Comment