থাকেন কুঁড়ে ঘরে, বাহন বলতে সাইকেল, শপথ নিয়ে মোদী মন্ত্রিসভায় সারেঙ্গি - Voice Of Sanatan
Vedic Video!Subscribe To Get Latest Vedic TipsClick Here

সাম্প্রতিক খবর

Voice Of Sanatan

সত্যের সন্ধানে অনুসন্ধান

Post Top Ad

থাকেন কুঁড়ে ঘরে, বাহন বলতে সাইকেল, শপথ নিয়ে মোদী মন্ত্রিসভায় সারেঙ্গি




দ্য ওয়াল ব্যুরো: মে মাসের গরম। রাইসিনার উঠোনে দুপুরে জল ছড়ালেও লাল মাটি খুব একটা ঠাণ্ডা হয়নি। বেশ গরমের ভাপ উঠছে। সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে নাগাড়ে শপথ পাঠ দেখতে দেখতে দর্শকাসনে ঠায় বসে অনেকেই ক্লান্ত। কিন্তু সাড়ে আটাট ফের যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল রাইসিনার উঠোনে।

রাষ্ট্রপতির সচিব যেই ঘোষণা করলেন, “রাজ্য মন্ত্রী হিসাবে এ বার শপথ নেবেন শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি..”। ওমনি হাততালির ঢেউ উঠল! কে ইনি? একেবারেই সাধারণ গোছের সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা। মাথার চুল উস্কো খুস্কো, হাওয়ায় উড়ছে

হ্যাঁ, তাঁকে নিয়ে উন্মাদনা এমনই। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর লক্ষ লক্ষ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা।
এবার লোকসভা ভোটে ওড়িশার বালাসোর আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গি। তাঁর রাজ্যের মানুষ বলেন, ‘ওড়িশার মোদী’। বালাসোরে বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে তিনি হারিয়েছেন ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে।

তবে এই জয়টাই তাঁর বড় সাফল্য নয়। প্রতাপ ওড়িশার বহু মানুষের মন জিতে নিয়েছিলেন অনেক আগেই। দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করলেও, একটা সাইকেল বই তাঁর বাহন নেই। আর থাকার জায়গা বলতে খড়ে ছাওয়া একটা কুঁড়ে ঘর। অবিবাহিত প্রতাপ বাবু সেই বাড়িতেই থাকতেন মায়ের সঙ্গে। গত বছর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এখন একা। পাড়ার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাই তাঁর অবসরের সঙ্গী। আদ্যন্ত সরল একটা মানুষ বলেই গ্রামের মানুষের কাছেও ঘরের লোক তিনি।

ওড়িশার নীলগিরির গোপীনাথপুর গ্রামের এক গরীব পরিবারে জন্মেছিলেন প্রতাপ। তখন ’৫৫ সাল। স্থানীয় ফকির কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি করতে মন চাইত না। ছেলেবেলা থেকে বরং মন পড়ে থাকত আধ্যাত্মিক বিষয়আশয় নিয়ে। সে সব নিয়ে লেখালিখিও করতেন। একটু বড় হলে একবার চলেও এসেছিলেন হাওড়ার বেলুড় মঠে। সাধু হয়ে দেশ সেবা করবেন বলে। কিন্তু মঠের সন্ন্যাসীরা যখন জানলেন তাঁর বাবা মারা গেছেন, বাড়িতে তাঁর মা একা, পত্রপাঠ ফেরত পাঠিয়ে দেন মায়ের সেবা করার জন্য।

তবে মঠের সাধু না হয়েও সংসারে থেকে তাঁর জীবন কোনও সাধুর থেকে কম নয়। কাছের লোকেরা বলেন, উনি  শিব জ্ঞানে জীবের সেবা করেন। গণশিক্ষা মন্দির যোজনার অধীনে প্রতাপ সারঙ্গি ময়ুরভঞ্জ ও বালাসোরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দুঃস্থ শিশুদের জন্য অনেক স্কুলও গড়েছেন। এছাড়াও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তাঁর অবদান কম নয়।
লোকসভার সাংসদ হওয়ার আগে প্রতাপ সারঙ্গি ওড়িশার নীলগিরি বিধানসভা আসন থেকে বিধায়ক ছিলেন। একবার ২০০৪ সালে, পরে ২০০৯ সালে। গত লোকসভা ভোটে হেরে গেছিলেন সামান্য ভোটের ব্যবধানে।
তবে এ বার লোকসভা ভোটে প্রতাপ সারঙ্গি জেতায় একজন খুব খুশি। তিনি হলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। মোদী যখনই ওড়িশায় যান, তখনই তাঁর সারঙ্গির সঙ্গে দেখা করেন। সারঙ্গির জয়ে মোদীর খুশি হওয়ারই কথা। দুজনেই গিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু হতে, দুজনকেই সন্ন্যাসীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। গেরুয়া ধারণ না করেও দু’জনেই এখন গেরুয়া শিবিরে।
দ্য ওয়াল 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

আপনার বিজ্ঞাপন দিন।