1পাটিপত্রঃপাটিপত্র বাঙালি হিন্দু বিবাহের প্রথম আচার। এই আচার লগ্নপত্র বা
মঙ্গলাচরণ নামেও পরিচিত। ঘটকের মাধ্যমে সম্বন্ধ করে বিবাহ স্থির হলে নগদ
বা গহনাপত্রে যৌতুক ও অন্যান্য দেনাপাওনা চূড়ান্তভাবে স্থির করার জন্য যে
অনুষ্ঠান হয়, তাকেই পাটিপত্র বলে। এই আচারের মাধ্যমেই বিবাহের অন্যান্য
আচারের সূচনা ঘটে। 2পানখিলঃপানখিল বাঙালি হিন্দু বিবাহের দ্বিতীয় আচার।
এটি পাটিপত্রের ঠিক পরেই পালিত হয়। পানখিলের অর্থ পান পাতায়
আনুষ্ঠানিকভাবে খিল দেওয়া বা খড়কে বেঁধানো। এই আচারটি প্রথমে বরের
বাড়িতে এবং পরে কনের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। পানখিল আচারে বাড়ির মেয়েরা
এবং প্রতিবেশিনীরা ‘বিয়ের গান’ গেয়ে থাকেন। এই গানের বিষয়বস্তু হল রাম ও
সীতার বিবাহ। 3দধি মঙ্গল: বিবাহের দিন বর ও কন্যার উপবাস। তবে উপবাস
নির্জলা নয়। জল মিষ্টি খাওয়ার বিধান আছে। তাই সারাদিনের জন্য
সূর্য্যোদয়ের আগে বর ও কন্যাকে চিড়ে ও দৈ খাওয়ানো হয়। 4গায়ে হলুদ:
সংস্কৃত ভাষায় এই রীতিকে বলা হয় গাত্রহরিদ্রা। হিন্দু ধর্মে কয়েকটি
জিনিসকে শুভ বলা হয়। যেমন শঙ্খধ্বনি, হলুদ ইত্যাদি। প্রথমে বরকে ও নিতবরকে
সারা গায়ে হলুদ মাখানো হয়। পরে সেই হলুদ কন্যার বাড়ী পাঠানো হয়।
কন্যাকে সেই হলুদ মাখানো হয়। 5শঙ্খ কঙ্কন: কন্যাকে শাখা পরানো হয়। এরপর
বিকালে বিবাহের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় 6বর বরণ: বর বিবাহ করতে এলে তাকে
স্বাগত জানান কন্যাপক্ষ। সাধাবনত: কন্যার মা তার জামাতাকে একটি থালায়
প্রদীপ, ধান দুর্ব্ব ও অন্যান্য কিছু বরণ সামগ্রী নিয়ে বরণ করেন। এরপর
বরকে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় ও দুধ এবং মিষ্টি খাওয়ানো হয় । 7সাত
পাক: বিবাহের মন্ডপে প্রথমে বরকে আনা হয়। এরপর কন্যাকে পিঁড়িতে বসিয়ে
আনা হয়। সাধারণত: কন্যার জামাইবাবুরা পিঁড়ি ধরে থাকেন। কন্যা পান পাতা
দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখেন। কন্যাকে পিঁড়িতে করে বরের চারপাশে সাতপাক
ঘোরানো হয়। 8শুভদৃষ্টি: বিবাহের মন্ডপে জনসমক্ষে বর ও কন্যা একে অপরের
দিকে চেয়ে দেখন। 9মালা বদল: কন্যা ও বর মালাবদল করেন। এই রীতির অর্থ হচ্ছে
দুজন একে অন্যকে জীবনসঙ্গী হিসাবে মেনে নিলেন। মুসলমান মতে একই ভাবে
কন্যাকে বলতে হয় "কবুল"। আবার ঠিক এই রকমই খৃষ্টান মতে চার্চের ফাদারের
সামনে বর ও কন্যা বিবাহে সন্মতি জানান। 10সম্প্রদান: কন্যার পিতা কন্যাকে
জামাতার হাতে সম্প্রদান করেন বেদমন্ত্রে। বরও জানান যে তিনি কন্যার ভরন
পোষনের দ্বায়িত্ব নিলেন। বিবাহের মন্ত্র হল যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং
মম। 11অঞ্জলি: কন্যা ও বর খৈ অগ্নাহুতি দেন। প্রচলিত বাংলায় একে বলে খৈ
পোড়া। বৈদিক যুগে মানুষ নানা ধরনের শক্তির উপাসনা করতেন। অগ্নিও তাদের
মধ্যে অন্যতম। 12সিঁদুর দান: বিবাহের শেষ রীতি হল বর কন্যার কপালে সিঁদুর
লেপন করেন। বাঙালি হিন্দু নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরেন।
জাতিভেদে ও অঞ্চলভেদে এই রীতি কিছু পরিবর্তিত হয়। তবে জানাবেন। ভুল
ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। নমস্কার সবাইকে।
Post Top Ad
হিন্দু ধর্মে বৈদিক বিবাহ রীতির ধাপসমূহের সংকলন ধাপসমূহঃ
Tags
# ইতিহাস
# হিন্দু সংবাদ
# হোম
# হোম slider

About sanatan tv
Tags
ইতিহাস,
হিন্দু সংবাদ,
হোম,
হোম slider
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment